যিনি কুরআনের আয়াত ও হাদিসে বর্নিত দোয়া সমূহ দারা কোনো সুস্থ/অসুস্থ ব্যাক্তি কে রুকইয়াহ সেবা দিয়ে থাকেন তাকে রাকী বলে। অর্থ্যাত যিনি কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক কোনো জিন, যাদু, বান, বা কুফরীতে আক্রান্ত অসুস্থ ব্যাক্তিকে রুকইয়াহ বা ঝাড়ফুক করে থাকেন তাকেই রাকী বলে।
অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন যাদু বদনজরের রুকইয়াহ সেবা নিতে কল করুনঃ 01708732272
বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে জিন সাধনা, ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালু যাদুর (কুফরী/বান) চর্চা ও ভন্ড তান্ত্রিক এর উৎপত্তি যে হারে বেড়েই চলেছে, তা আমাদের দৈনন্দিন সাংসারিক ও কর্মজীবনের চরম ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। কারণ এই ভন্ড তান্ত্রিকদের দ্বারা এমন কোনো নিকৃষ্ট কাজ নেই, যা তাদের দ্বারা সংগঠিত হয়না। টাকার বিনিময়ে এই ভন্ডরা ব্ল্যাক ম্যাজিকের মাধ্যমে অগনিত নারী পুরুষের সংসারে বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে, সুস্থ মানুষকে অসুস্থ বানিয়ে রাখছে। কতশত সচ্ছল পরিবারকে দরিদ্রতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে পৌঁছাচ্ছে। এছাড়া ও আরো কত জগন্য কাজ ইত্যাদি তো রয়েছেই। এদের আধিপত্য বিস্তার রোধে বাংলাদেশের প্রতিটা পরিবারে একজন করে অভিজ্ঞ রাকী থাকা খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। তাই একজন ভালো রাকী বা কবিরাজ হতে গেলে কতিপয় শর্ত রয়েছে যা আমাদের পালন করতে হবে।
ভালো রাকি বা কবিরাজ হওয়ার শর্ত সমূহ।
আমরা যেই জগতে চিকিৎসা করতে যাচ্ছি এইটা একপ্রকার যুদ্ধের শামিল। কারন এই জগতে আমাদের চিকিৎসার প্রয়োজনে, জিনকে কখনো শাস্তি দেওয়া, হত্যা করা,আগুন দিয়ে জালিয়ে দেওয়া, কালো যাদু, বান, কুফরি ইত্যাদি ধবংস করা সহ আরো অনেক কিছুই করতে হয়, যার কারনে আমাদের প্রতিনিয়তই জিন শত্রু, তান্ত্রিক শত্রু, মানুষ শত্রু বৃদ্ধি পেতে থাকবে । এবং এরা সর্বদা আমাদের পিছনে লেগে থাকবে, ও মোক্ষম সুযোগ খুজবে আমাদের ক্ষতি করার জন্য। যখনই এরা আমাদের দূর্বল জায়গা গুলো খুজে পাবে, সাথে সাথে আঘাত হানবে আমাদের ক্ষতি করার জন্য । সেই দূর্বল জায়গা গুলো হচ্ছে আমাদের গুনাহ সমূহ। যখনই আমরা গুনাহে লিপ্ত হবো, তখই জিন জাতিরা সুযোগ পেয়ে যাবে আমাদেরকে আঘাত করার জন্য। আর এই আঘাত গুলো আমরা রোধ করতে পারবো একমাত্র তাকওয়াবান ভালো রাকি বা কবিরাজ হওয়ার মাধ্যমে।
আর সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে যে, আমরা আমাদের জিন জাদুর চিকিৎসায় সফলতা পাবার জন্য ও আমাদের দোয়া গুলো সাথে সাথে কবুল হওয়ার জন্যেও এই শর্ত সমূহ আমাদের মেনে চলা খুবই জরুরী।
নিম্নে ভালো রাকি বা কবিরাজ হওয়ার শর্ত সমূহ ব্যাখা করা হলোঃ
১) শিরক থেকে মুক্ত থাকা।
মহান আল্লাহ তায়াল সবচেয়ে বেশি রাগান্বিত হন শিরক এর গুনাহের ফলে। শিরক এর গুনাহের ফলে আমাদের ঈমানই চলে যায় যেখানে, সেখানে দোয়া গুলো কবুল হওয়াতো অনেক দূরের কথা। তাই আমরা যারা রাকী আছি, তাদের অবশ্যই শিরক এর গুনাহ যেন না হয়, বা আমাদের চিকিৎসা পদ্ধতিতে কোনো ধরনের শিরক এর ছোয়া যেনো না থাকে, সেই দিকে সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে।
২) কুরআন তেলাওয়াত সহিহ হতে হবে।
আমাদের কুরআন তেলাওয়াত সহিহ হওয়া বাঞ্ছনীয়। যদি আমাদের কুরআন তেলাওয়াত অশুদ্ধ থাকে, তাহলে অতি দ্রুতই আমাদের কুরআন তেলাওয়াত সহীহ হওয়ার জন্য যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেগুলো আমরা অনুসরন করবো।
৩) হালাল খাবার খেতে হবে।
দোয়া কবুলের শর্তের মধ্যে হালাল উপার্জনের খাবার ভক্ষণ করা একটি শর্ত । তাই আমাদের সব সময় হালাল উপার্জনের খাবার খেতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের উপার্জনে সরাসরি হারাম বা হারামের কোনো স্পর্শ না থাকে।
৪)মিথ্যা ও গীবত পরিত্যাগ করতে হবে।
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশী আমাদের মধ্যে যেই গুনা সমূহ হয়ে থাকে তার মধ্যে মিথ্যা ও গীবত অন্যতম। বিশেষ করে গীবতের ছড়াছড়ি সর্বত্র। অথচঃ গীবত করা আর নিজের মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়া সমান। আল্লাহ আমাদের মাফ করুক। তাই আমাদের মিথ্যা কথা ও গীবত করা পরিত্যাগ করতে হবে।
৫) জিনা বা ফাহেশা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বর্তমান এই জামানায় ফিতনার এত ছড়াছড়ি এবং এতটা সহজলভ্য। যার কারনে মানুষ খুব সহজেই জিনা ব্যভিচারে জড়িয়ে যায়। একজন রাকী বা কবিরাজকে বিবাহিত হওয়া বাঞ্চনীয়। কারন বিবাহ মানুষকে জিনা থেকে দূরে রাখে। আর বিবাহ না করলে সকল প্রকার জিনা ব্যবিচার থেকে নিজেকে হেফাজত রাখবেন।
৬) কবীরা ও সগীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকা।
কবীরা গুনাহতো বটেই, সগীরা গুনাহ থেকেও যথাসম্ভব বাঁচতে হবে। না হলে আমাদের চিকিৎসার ফিল্ডে আমাদের কাঙ্ক্ষিত দোয়া গুলো কবুল হওয়ার ক্ষেত্রে বাধাপ্রাপ্ত হবে। তাই আমাদের সকল প্রকার কবিরা ও সগীরা গুনা থেকে বেচে থাকতে হবে।
৭) সব সময় পবিত্রতা অবলম্বন করতে হবে ।
আমাদের সব সময় পবিত্র থাকতে হবে কারণ বশত কখনো অপবিত্র হলে সাথে সাথে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে, দেরী না করাই উত্তম। আর চেষ্টা করবেন সব সময় ওজু অবস্থায় থাকতে।
৮) পবিত্র পোশাক পরিধান ও পবিত্র বিচানায় ঘুমানো।
আমাদের সর্বদা পবিত্র পোষাক পরিধান করতে হবে এবং পবিত্র বিচানায় ঘুমাতে হবে। প্রশ্রাব পায়খানা করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে, যেনো প্রশাব পায়খানার সময় ফোটা এসে আমাদের পোষাকে না লাগে।
৯) নিয়মিত নামাজ আদায় করা।
আমাদের সব সময় জামাতের সহিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে। কোনো জরুরী কারন ছাড়া যেনো আমাদের নামাজ মিস না হয়।
১০) সব সময় সুন্নাহর উপর থাকা।
দৈনন্দিক জীবনে যত বেশি সুন্নাহর উপর থাকতে পারবেন তত বেশি আল্লাহর থেকে সাহায্য পাবেন রাকি হিসেবে।
১১) তাহাজ্জুদ পড়ার অভ্যাস করা।
আমরা যে অদৃশ্যের জগতে লড়াই করতে যাচ্ছি, সেখানে আমাদের উপর আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত থাকা খুবই জরুরী । যা আমাদের তাহাজ্জুদের মাধ্যমে হাসিল করা খুবই সহজ। কারন তাহাজ্জুদ আমাদেরকে রবের কাছাকাছি নিয়ে যায়। আর তাই আমাদের নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
১২) বেশি বেশি স্টাডি করা।
জিন/জাদু, জিনদের অধিকার, জীবন-যাপন সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। এজনই আমাদের বেসি স্টাডি করতে হবে। জিন যাদু সম্পর্কিত বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যা আমাদের একজন দক্ষ রাকি হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
এই রীতিনীতি গুলো যদি আপনারা সঠিকভাবে মেনে চলেন, তাহলে আপনারা একজন দক্ষ ও ভালো রাকী হতে পারবেন এবং আপনাদের রুহানী শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এই অদৃশ্যের জগতে যার রুহানি শক্তি যত বেশি, তার চিকিৎসার সফলতার তত বেশি। ইন শা আল্লাহ এর ফলাফল যখন আপনারা জিন যাদুর চিকিৎসায় নামবেন তখনই বুঝতে পারবেন যে মহান আল্লাহ তায়ালা কত দ্রুত আপনাদের দোয়া গুলো কবুল করতেছেন। কতটা দ্রুত আপনারা চিকিৎসায় সফলতা পাচ্ছেন, তা আপনারা নিজেরাই টের পাবেন। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে একজন তাকওয়াবান আল্লাহভীরু রাকি বা কবিরাজ হওয়ার তোফিক দান করুন। আমীন।
5 thoughts on “রাকী কি? ভালো রাকি বা কবিরাজ হওয়ার শর্ত সমূহ।”