কোন কিছুর প্রতি চোখের কুদৃষ্টি বা কোন কিছু দেখে মনে মনে তার প্রতি হিংসাত্মক দৃষ্টি লালন করাই হচ্ছে বদনজর। বদ নজরের উৎপত্তি মানুষের চোখ থেকে কিন্তু এর প্রতিক্রিয়ার স্থান তার অন্তর। বদনজরের প্রভাবে মানুষ ছোটখাটো রোগব্যাধি থেকে মৃত্যু অবধি চলে যায়।
“এই বদনজর আবার দুধরনের হয়ে থাকে”
১) মানুষের নজর ২) জীনের নজর।
মানুষের কুদৃষ্টি বা হিংসাত্মক দৃষ্টির মাধ্যমে যে নজর লাগে তাকে মানুষের বদনজর লাগে। আর জিনের কুদৃষ্টির মাধ্যমে যে নজর লাগে তাকে জীনের বদনজর বলে। বদনজরের কতিপয় লক্ষণ সমূহ রয়েছে যেই লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে একজন মানুষ সহজেই অনুধাবন করতে পারে যে, তার বদনজর লেগেছে, আজকের Ruqyah Seba – রুকইয়াহ সেবা এর এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করবো বদনজরের লক্ষণ সমূহ নিয়ে।
অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন যাদু বদনজরের রুকইয়াহ সেবা নিতে কল করুনঃ 01708732272
বদনজরের লক্ষণ সমূহঃ
যখন আমাদের বদনজর লাগবে, তখন আমাদের মধ্যে কতিপয় লক্ষণ সমূহ দেখা দিবে যার মাধ্যমে আমরা বুজতে পারবো আমাদের বদনজর লেগেছে। নিম্মে বদনজরের লক্ষণ সমূহ দেওয়া হলোঃ
১) শরীরের সাধারণ দুর্বলতা থাকা, ক্ষুধা হ্রাস এবং বমি বমি ভাব।
২)চেহারাতে ফ্যাকাশে ফিতে/ধূসর / হলুদ হয়ে যাওয়া।
৩)স্থায়ীভাবে উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রা/ জ্বর থাকা [থার্মোমিটার না উঠা]
৪)কোন কারণ ছাড়াই কান্নাকাটি করার আশ্বাস।
৫) কাজকর্মে মনোযোগ না বসা।
৬) আত্মনির্ভরশীলতা হারিয়ে ফেলা।
৭) ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া।
৮) কাজকর্মে ঘনঘন ভুল করা
৯) লাল চোখ ওয়ালা কিংবা বোরকা পরিহিত চোখ খোলা মানুষ স্বপ্নে দেখা।
১০)মরা মানুষ স্বপ্নে দেখা বা নিজেকে মৃত দেখা।
১১)পারিবারিক জীবনে নিজেকে অসুখী মনে হওয়া
১২)বিয়ে বা বিয়ের প্রস্তাব বারবার ভেঙ্গে যাওয়া
১৩)একের পর এক বিভিন্ন ধরণের রোগ লেগে থাকা; একটা রোগ ভালো না হতেই আরেকটা শুরু হওয়া
১৪)শরীরে বিভিন্ন ধরণের অসুখ থাকা কিন্তু মেডিকেল টেস্টে কোনো কোনো কারণ খুঁজে না পাওয়া
১৫)উভয় হাত এবং পায়ের মধ্যে প্রায়ই ব্যথা, শরীরের ব্যথা আবর্তিত, শরীরের ব্যথা এক জায়গায় স্থির না হওয়া।
১৬)চিরস্থায়ী মাথাব্যাথা ( সব সময় মাথাব্যথা)
১৭)বিভিন্ন অসুখ লেগে থাকা, অনেক চিকিৎসার পরেও ভালো না হওয়া (ঠান্ডা,কাশি, জ্বর)
১৯)পঞ্চমুখী মমুলাট,( কাজে মন না বসা, লেখাপড়া মন না বসা, নামাজ, যিকিরে মন না বসা)
২০)মহিলাদের/পুরুষদের অত্যধিক চুল পড়ে যায়(যা শ্যাম্পু ব্যবহার করেও কাজ হয়না)
২১) আত্মীয়, বন্ধু ও সহকর্মীদের সাথে দেখা করতে অপছন্দ লাগা।
২২)ব্যবসা, কাজ বা পেশায় বিঘ্ন এবং ক্ষতি, ঝামেলা লেগে থাকা।
২৩)মাঝেমাঝে বুক ধড়পড় করা, দমবন্ধ বা অস্বস্তি লাগা।
২৪)পেটে প্রচুর গ্যাস জমে থাকা।
২৫)মেজাজ খিটখিটে থাকা, কোন কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া।
২৬)একটি প্রাথমিক / বিশেষজ্ঞ কাজ সম্পাদন করতে অক্ষম। যদি কেউ তার প্রাথমিক / বিশেষজ্ঞ কাজ করতে ইচ্ছুক হয়, তবে সে অত্যন্ত অলস হবে অথবা সেখান থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া।
উপরোল্লেখিত লক্ষণগুলোর পাশাপাশি জিনের নজর লাগার বিশেষ কিছু লক্ষণ –
২৭) কেহ না থাকা সত্তেও ‘আশেপাশে কেহ আছে’ সর্বদা এমনটা মনে হওয়া
২৮) ছায়া চলাচল করতে দেখা
২৯) রাতে ঘুম না হওয়া
৩০) ওয়াসওয়াসা বেড়ে যাওয়া
উপরোল্লেখিত লক্ষণগুলোর পাশাপাশি বাচ্চাদের বদনজর লাগার বিশেষ কিছু লক্ষণ –
৩১) শিশুর খাবার খেতে না চাওয়া এবং সাধারণ কিছুতেই চমকে ওঠা।
৩২) অহেতুক খুব ভয় পাওয়া।
৩৩) অস্বাভাবিক কান্নাকাটি করা।
বদনজরের লক্ষণ সমূহের ম্যাক্সিমাম গুলো বিদ্যমান থাকলে, এবং ডাক্তারি চিকিৎসা করে কোনো সমাধান না পেলে ধরে নিতে হবে আমাদের উপর বদনজর এর প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। এর এজন্য আমাদের তাড়াতাড়ি রুকইয়াহ সেবা নিতে হবে। এইটা আমরা নিজেরাই নিজেদের সেলফ রুকইয়াহ করতে পারি, অথবা কোনো অভিজ্ঞ রাকী দারা রুকইয়াহ সার্ভিস নিতে পারি।
রিলেটেড আর্টিকেলঃ মুখ দোষের পানি পড়ার দোয়া।
বদনজরের চিকিৎসাঃ
যেই ব্যাক্তির হিংসাত্মক মনোভাব বা দৃষ্টির দারা আমাদের বদনজর লেগেছে, এইটা যদি আমরা শনাক্ত করতে পারি তাহলে বদনজরের চিকিৎসাটা খুবই সিম্পল, উক্ত ব্যাক্তি অজু করা পানি বা হাত ধোয়ার পানি সংগ্রহ করে নিজের সমস্ত শরীরে ঢেলে দিলেই ইন শা আল্লাহ আরোগ্য লাভ করবেন।
আর যদি উক্ত ব্যাক্তির অজু করা পানি বা হাত ধোয়ার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব না হয় তাহলে রুকইয়াহ করতে হবে। রুকইয়াহ করলেই বদনজর কেটে যাবে।
অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন যাদু বদনজরের রুকইয়াহ সেবা নিতে কল করুনঃ 01708732272
বদনজরের রুকইয়াহঃ
নিন্মে বর্ণিত দোয়া ও সূরাগুলো নিজের মাথায় বা বুকে হাত রেখে পড়তে পারেন অথবা পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নিতে পারেন। এই পদ্ধতি ছোট বাচ্চা-বয়স্ক, ছেলে-মেয়ে সবার জন্য প্রযোজ্য ।
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উ’ঈযুকুম বিকালিমা তিল্লা হিত্তাম্মাতি, মিন কুল্লি শাইত্বা-নিও- ওয়া হাম্মাতি, ওয়ামিন কুল্লি আ’ঈনিল্লা-ম্মাতি।
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلَيْهِ وَأَذْهِبْ عَنْهُ حَرَّ الْعَيْنِ وَبَرْدَهَا وَوَصَبَهَا
আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলাইহি ওয়া আযহিব ‘আনহু হাররিল ‘আইনি ওয়া বারদাহা ওয়া ওয়াসাবাহা
بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيْكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيْكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِيْ عَيْنٍ
বিসমিল্লাহি ইউবরিকা ওয়া মিন কুল্লি দা-ইন ইয়াশফিকা ওয়া মিন শাররি হা-সিদিন ইযা হাসাদ, ওয়া শাররি কুল্লি যি ‘আইন
اَللّٰهُمَّ عَافِنِيْ فِيْ بَدَنِيْ، اَللّٰهُمَّ عَافِنِيْ فِيْ سَمْعِيْ، اَللّٰهُمَّ عَافِنِيْ فِيْ بَصَرِيْ، لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ
আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী বাদানী, আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী সাম্‘ঈ আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী বাসারী। লা ইলা-হা ইল্লা আনতা।
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ يَشْفِيكَ، بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
বিসমিল্লা-হি আরকীক্, মিন্ কুল্লি শাইয়িই ইউ’যীক্। মিন্ শার্রি কুল্লি নাফসিন্ আও আ’ইনি হাসিদিন, আল্লা-হু ইয়াশফীক্, বিসমিল্লা-হি আরকীক্।
بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
বিসমিল্লা-হি ইউবরীক্, ওয়ামিন কুল্লি দা-ই ইয়াশফীক। ওয়ামিন শার্রি হাসিদিন ইযা- ‘হাসাদ। ওয়া শার্রি কুল্লি যী “আঈন ।
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
আল্লা-হুম্মা রাব্বান না-স আযহিবিল বা’স , আশফি ওয়া আনতাশ শা-ফী লা-শিফাআ ইল্লা-শিফাউকা শিফাআল লা-ইউগা-দিরু সাক্বামা।
এরপর সুরা ফাতিহা
আয়াতুল কুরসি ১বার,
সুরা ইখলাস,সূরা ফালাক সুরা নাস ৩ বার করে পড়বেন।
এরপর দুই হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীর মুছে নিবেন।
চাইলে সুরা ফালাক নাস এর আয়াত গুলো বার বার রিপিট করে পড়তে পারেন করতে পারেন। সবধরনের রুকাইয়ায় এগুলো বিশেষভাবে উপকারী। আর বাচ্চা বা অন্যের জন্য রুকাইয়াহ করতে চাইলে বাচ্চা/রোগীর মাথায় হাত রেখে এই দুয়াগুলো পড়বেন এবং মাঝেমাঝে বাচ্চা/রোগীর গায়ে ফুঁ দিবেন, এভাবে কয়েকবার করবেন।
সমস্যা বেশি হলে উল্লেখিত পদ্ধতিতে রুকাইয়া করা শেষে আরেকবার এগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন খাবেন এবং গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করবেন। সমস্যা ভালো না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এই দুটো কাজ করবেন । এছাড়া কোন অঙ্গে ব্যাথা থাকলে এসব দোয়া-কালাম পড়ে তেলে ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন মালিশ করতে পারেন। তবে জয়তুন /অলিভ অয়েল হলে বেশি ভালো হয়।
অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন যাদু বদনজরের রুকইয়াহ সেবা নিতে কল করুনঃ 01708732272