সালাফে সালেহিনের থেকে জিনের চিকিৎসা বিষয়ক অনেক ঘটনা বর্ণিত আছে।
এক.
মৃগীরোগের একজন রোগীকে আক্রান্ত অবস্থায় দেখে ইবনু মাসউদ এ তার কানের কাছে গিয়ে সূরা মুমিনুনের ১১৫ নং আয়াত থেকে সেই সূরার শেষ পর্যন্ত পড়েন। ফলে সে সাথে সাথে সুস্থ হয়ে যায়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনু মাসউদ -কে ডেকে বললেন, ‘তুমি ওর কানের কাছে গিয়ে কী পড়লে?’ ইবনু মাসউদ আয়াতটি শোনালেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “কোনো যোগ্য ব্যক্তি যদি পাহাড়ের ওপরে এটা (সূরা মুমিনুনের এই আয়াত/আয়াতগুলো) পড়ে, তাহলে পাহাড়ও সরে যাবে৷
অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন, যাদু, নজরের রুকইয়াহ সার্ভিস নিতে যোগাযোগ করুন : 01708-732272
এবার ইমাম সুয়ুতি -এর কিতাব থেকে কয়েকটি ঘটনা সংক্ষেপে বলা যায়।
দুই.
শিয়াদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি হজ করতে গিয়েছিল। সে যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ আমল করতে যাচ্ছিল, তখনই মৃগীরোগে আক্রান্ত হচ্ছিল (অনেকের মতে, মৃগীরোগ জিনের আসরের কারণে হয়)। হুসাইন বিন আবদুর রহমান মিনায় ওই লোকটিকে দেখতে পেয়ে জিনকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “তুমি যদি ইহুদি হও, তবে মূসা -এর দোহাই; যদি খ্রিষ্টান হও, তবে ঈসা -এর দোহাই, আর মুসলিম হলে তোমাকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দোহাই দিয়ে বলছি, তুমি চলে যাও।’ তখন জিন কথা বলে উঠল, ‘আমি ইহুদিও না, খ্রিষ্টানও না; বরং মুসলিম। আমি এই হতভাগাকে দেখেছি, সে আবু বকর ও উমর-কে গালিগালাজ করে। এজন্য আমি তাকে হজ করতে দিইনি।’
তিন.
মুতাযিলা ফিরকার এক ব্যক্তিকে জিনে ধরেছিল। সকলেই ভিড় করে তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল। সাঈদ ইবনু ইয়াহইয়া তার কাছে গিয়ে বললেন, ‘তুমি এর ওপর কেন আক্রমণ করেছো? আল্লাহ কি তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে? না তুমিই বাড়াবাড়ি করছো?’
তখন লোকটার মুখ দিয়ে জিন বলে উঠল, ‘আপনি আমাকে ছেড়ে দিন। আমি একে খতম করে ফেলব। সে কিনা বলছে, কুরআন মাখলুক।’ (এটা মুতাযিলা গোষ্ঠীর একটা আকীদা)
চার.
এবারের ঘটনাটি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল-এর যুগের। তৎকালীন বাদশাহের মেয়েকে জিন আসর করেছিল। বাদশাহের এক মন্ত্রী ইমাম আহমাদ -এর কাছে ছুটে এলেন। ইমাম আহমাদ একটি জুতা বের করে ওজু করলেন। এরপর বললেন, ‘জিনকে গিয়ে বলো, “তুমি কি এই মেয়েকে ছেড়ে যাবে? নাকি ইমাম আহমাদের হাতে জুতার বাড়ি খাবে?””
মন্ত্রী গিয়ে কথাগুলো জিনকে বলল। জিন বলল, “আমি চলে যাব। ইমাম আহমাদ যদি বাগদাদ থেকে চলে যেতে বলেন, তবে বাগদাদ থেকেও চলে যাব। ইমাম আহমাদ আল্লাহর অনুগত বান্দা। যে আল্লাহর অনুগত হয়, সব সৃষ্টি তার অনুগত হয়ে যায়।’ এরপর জিন চলে গেল।
কিন্তু ইমাম আহমাদ -এর ইন্তেকালের পর সেই জিন আবার এসে বাদশাহের মেয়েকে আসর করল। এবার বাদশাহ এক ব্যক্তিকে ইমাম আহমাদ-এর ছাত্র আবু বকর মারওয়াজি -এর কাছে পাঠালেন। তিনি একটা জুতা নিয়ে মেয়েটির কাছে আসলেন। তখন মেয়েটির মুখ দিয়ে জিন কথা বলে উঠল, ‘এবার আর আমি যাচ্ছি না। ইমাম আহমাদ আল্লাহর অনুগত বান্দা ছিলেন, তাই তার কথা শুনে চলে গিয়েছিলাম। তোমাদের কথা তো শুনব না।’
পাঁচ.
ইবনু তাইমিয়্যা এক মেয়ে রোগীর ওপর সূরা মুমিনুনের ওই (১১৫ নং) আয়াত পড়েন, তখন জিন কথা বলে ওঠে। তখন ইবনু তাইমিয়্যা জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি ওকে ধরেছো কেন?”
জিন বলল, ‘আমি ওকে পছন্দ করি।’
ইবনু তাইমিয়্যার বললেন, ‘সে তো তোমাকে পছন্দ করে না।’
জিন বলল, ‘আমি ওকে নিয়ে হজে যাব।’
ইবনু তাইমিয়্যা বললেন, ‘সে তো তোমার সাথে হজে যেতে চায় না! তুমি কেন কষ্ট দিচ্ছ?’
জিনটা একরোখা ছিল। ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা তাকে আচ্ছামতো পিটুনি দিলেন। তখন জিন অপারগ হয়ে বলল, ‘আপনি বলছেন তো? আপনার কথা মেনে আমি চলে যাচ্ছি!”
ইবনু তাইমিয়্যার বললেন, ‘থামো থামো! আমার কথা নয়; বরং আল্লাহ এবং রাসূলের কথা মেনে চলে যাও।’
এবার জিন চলে গেল। সে আর কখনো আসেনি।
ইবনুল কায়্যিম বলেন, ‘রোগীর জ্ঞান ফেরার পর জিজ্ঞেস করে দেখা গেল, এতকিছু হয়েছে—এর কিছুই সে টের পায়নি।’
অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন, যাদু, নজরের রুকইয়াহ সার্ভিস নিতে যোগাযোগ করুন : 01708-732272