একজন ভালো রাকীর বৈশিষ্ট্য বা লক্ষণ সমূহ।

নিজের জন্য নিজে রুকইয়াহ করলে তেমন বিশেষ কিছু হওয়ার দরকার নেই। প্রতিদিন অনেক অনেক নিয়মকানুন অনুসরণ করা বা বিরাট আমলদার হওয়ারও আবশ্যকতা নেই। তবে কেউ যদি জনগণের জন্য নিয়মিত রুকইয়াহ করতে চান, পারিভাষিকভাবে বললে ‘রাকী‘ হতে চান, তাহলে তার নিজের এবং পরিবারের জন্য কিছু বিষয় গুরুত্বের সাথে খেয়াল রাখতে হয়। তাই এখন আমরা জানব, যিনি চিকিৎসা করবেন, তার কী কী গুণ ও বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত—

একজন-ভালো-রাকীর-বৈশিষ্ট্য

 

অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন যাদু বদনজরের  রুকইয়াহ সেবা নিতে কল করুনঃ  01708732272

ভালো রাকীর লক্ষণ সমূহ

১. আকীদা বিশুদ্ধ হওয়া। শিরক-বিদআতমুক্ত পরিচ্ছন্ন ইসলামি আকীদার অনুসারী হওয়া এবং আল্লাহর ওপর নিখাদ ভরসা থাকা।

২. আল্লাহর কালাম যে রোগ-ব্যাধি, কুনজর, জাদু, জিনের ওপর প্রভাব ফেলতে সক্ষম—এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা। ‘সুস্থতা কেবল আল্লাহরই হাতে, আমার কোনো সাধ্য নেই মানুষকে সুস্থ করার’—এটা খুব ভালোভাবে অন্তরে গেঁথে নেয়া। কোনো রোগী সুস্থতা লাভ করার খবর পেলে আত্মগর্বে আক্রান্ত না হওয়া; বরং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো, শোকরানা নামাজ আদায় করা। এর ভালো প্রভাব রয়েছে।

৩. প্রতিদিনের মৌলিক আহকাম তথা নামাজ-রোজা, মাহরাম-গাইরে মাহরাম ইত্যাদি বিষয়ে যত্নবান হওয়া। হালাম-হারামের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া, হারাম থেকে সম্পূর্ণভাবে বেঁচে থাকা।

৪. মানসিকভাবে দৃঢ় এবং সাহসী হওয়া। আর অধিক পরিমাণে যিকির-আযকার, নফল রোজা, তাহাজ্জুদ ইত্যাদির মাধ্যমে আত্মিকভাবেও সুদৃঢ় হওয়া।

৫. জিন জাতির অবস্থা তথা : প্রকারভেদ, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, তাদের আচার- আচরণ, জিনেরা কিভাবে মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে, এরপর তারা কিভাবে বিদায় হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত থাকা। জিনদের মাঝে মিথ্যা বলার প্রবণতা খুবই বেশি। এজন্য জিনদের স্বভাব, ধোঁকাবাজি, কূটকৌশলের ব্যাপারে সজাগ এবং সতর্ক থাকা।

৬. জাদু, জিন, বদনজর, ওয়াসওয়াসা—এই সব বিষয়গুলোতে ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে পর্যাপ্ত ধারণা রাখা। অজ্ঞতা নিয়ে কাজে নেমে অন্যদের কাজের ক্ষেত্র নষ্ট না করা।

৭. কুরআন তিলাওয়াত সহিহ-শুদ্ধ হওয়া। অশুদ্ধভাবে কুরআন পড়লে উলটা
গুনাহ হবে।

৮. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত প্রতিদিনের মাসনুন আমলগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া। বিভিন্ন সময়ে হেফাজতের দুআ যেমন: সকাল- সন্ধ্যার দুআ, ঘুমের আগের দুআ, মসজিদে প্রবেশ করার দুআ, বাড়ি থেকে বের হওয়ার দুআ, নির্জন জায়গায় গেলে পড়ার দুআ, টয়লেটে প্রবেশেরদুআ—এসবগুরুত্বের সাথে আদায় করা।

৯. নিজের পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া, তাদেরকে প্রতিদিনের মাসনুন আমলগুলোতে অভ্যস্ত করে তোলা। তাদের অধিকারের ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকা। রুকইয়াহ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে যেন কোনোভাবেই তাদের হক নষ্ট না হয়।

১০. নিজের বাড়িকে গুনাহের সরঞ্জাম থেকে পবিত্র রাখা। যেমন : কোনো জীবের ছবি, ভাস্কর্য বা মূর্তি, মানুষ বা প্রাণীর পুতুল সাজিয়ে বা ঝুলিয়ে না রাখা। গানবাজনা না চলা, বাদ্যযন্ত্র না রাখা; ঘরে যেন রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করতে পারে আর শয়তান না থাকতে পারে—সেই ব্যবস্থা করা ।

১১. আর সর্বদা নিজের গুনাহের ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকা। কারণ, আপনি নিজেই পরাজিত হলে, অন্যের ওপর ভর করা শয়তানকে শায়েস্তা করবেন কিভাবে? তাই কখনো এমন কিছু না করা, যার মাধ্যমে শয়তান আপনার ওপর বিজয়ী হয়ে যায় এবং আপনাকে এই কাজ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

১২, রাকী বিবাহিত হওয়া উত্তম। অবিবাহিত কারও তুলনায় বিবাহিত ব্যক্তি রুকইয়াহ করলে এর প্রভাব বেশি পড়ে। আর পুরুষ হওয়া আবশ্যক না। তবে নারীর তুলনায় পুরুষ হলে ভালো হয়। নারীরা চাইলে নারীদের জন্য রুকইয়াহ করতে পারবেন।

১৩. জিন বা জাদু-সংক্রান্ত সমস্যা মেয়েদের বেশি হয়; সুতরাং নারীঘটিত ফিতনার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করতে হবে। এ বিষয়ে কেউ অতি-সংবেদনশীল হলে, তার জন্য ঢালাওভাবে মানুষের রুকইয়াহ করা উচিত হবে না।

১৪. সমস্যা সমাধানে রাকীকে অবশ্যই আন্তরিক হতে হবে। এজন্য উচিত হলো, চিকিৎসকের শিষ্টাচার (Medical Ethics) সম্পর্কে ধারণা রাখা, রোগীর গোপনীয়তা রক্ষা করা, রুকইয়ার ভিডিও যেনতেন ভাবে প্রচার করে শয়তানের ফাঁদে পা না দেয়া, রোগীর সুস্থতার জন্য খাস করে দুআ করা।

১৫. রোগীর শারীরিক সুস্থতার প্রতি খেয়াল রাখার পাশাপাশি আল্লাহর সাথে সম্পর্কের উন্নয়নের দিকে গুরুত্ব দেয়া। দ্বীনদারির খোঁজখবর নেয়া এবং সে অনুযায়ী দ্বীনের দাওয়াত দেয়া, উৎসাহিত করা। কারণ অনেকেই দুনিয়াতে পূর্ণ সুস্থতা পায় না, এমন হতেই পারে। কিন্তু কেউ যেন আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

১৬. যেকোনো পরামর্শ বা প্রেসক্রিপশন দেয়ার ক্ষেত্রে রোগীর সময় এবং সামর্থ্য বিবেচনায় রাখা উচিত। একইভাবে আরও উচিত হলো এ বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা—যাতে রোগীর কষ্ট কম হয়, রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়, সে অনাকাঙ্ক্ষিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে পারে, একে একে সবগুলো সমস্যা দূর হয়ে যায় ইত্যাদি।

১৭. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, জিন-জাদুর চিকিৎসা করতে গিয়ে কুরআন- সুন্নাহ-বিরোধী অবৈধ কোনো পন্থার অনুসরণ না করা। কোথাও ঝাড়ফুঁকের কোনো পদ্ধতি দেখলেই অতি উৎসাহী হয়ে আগ-পিছ না ভেবে, বিজ্ঞ আলিমদের মতামত না জেনে সেটা পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করতে না যাওয়া। সন্দেহজনক সবকিছু পরিহার করা।

অভিজ্ঞ রাকীর মাধ্যমে জিন যাদু বদনজরের  রুকইয়াহ সেবা নিতে কল করুনঃ  01708732272

১৮ প্রত্যেক রাকীর জন্য সতর্কবার্তা হচ্ছে, ‘এমন কিছু না করা, যাতে আপনার কারণে রুকইয়াহ শারইয়ার প্রতি মানুষের মাঝে বিরূপ ধারণা বিস্তার করতে পারে। সর্বদা আল্লাহকে ভয় করা। অতিরিক্ত টাকার লোভ না করা। এটাকে ব্যাবসা নয়; বরং খিদমত ও দ্বীনের দাওয়াতের সুযোগ হিসেবে নেয়া।’

আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন এবং কাজে-কর্মে ইখলাস দান করুন, আমিন।

Leave a Comment